তিন সন্তানই উচ্চ শিক্ষিত
এম বশর চৌধুরী উখিয়া, কক্সবাজার:
কে না স্বপ্ন দেখে ? কেউ স্বপ্ন দেখে নিজের উজ্জল ভবিষ্যতের, কেউ কেউ স্বপ্ন দেখে পিতা মাতার শেষ বয়সে শান্তিপূর্ন, সুখময়, সুন্দর জীবনের। কারো স্বপ্ন রচিত হয় দারিদ্র, অপুষ্টি ব্যাধি এবং অশিক্ষা কু-শিক্ষাকে বিতাড়নের জন্য, কেউ বা স্বপ্ন দেখে সন্তান সন্ততিকে দুধে ভাতে রাখার এবং তাদের বাড়ী গাড়ীতে সমৃদ্ধ করার। এই অর্থে সবাই আমরা স্বাপ্নিক। সবাই স্বপ্ন দেখে থাকি। তেমনি উখিয়ার রুমখা পালং গ্রামে বসে নিজের তিন সন্তান কে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে আজ সফল হয়েছেন অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক অরুন কান্তি দাশ ও গৃহবধু মাধুরী দাশ। আকাশ ছোঁয়া আত্ম বিশ্বাস সমৃদ্ধ সৃজন শীলতায় উদ্দীপ্ত শিক্ষক অরুন কান্তি দাশ ও গৃহবধু মাধুরী দাশ দারিদ্রতাকে জয় করে নিজের তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
শিক্ষক অরুন কন্তি দাশ জানান, তার তিন সন্তান আছে। তৎমধ্যে বড় ছেলে মোহন কুমার দাশ এমএসসি পাস করার পর সার্ক আবহাওয়া গবেষনা কেন্দ্র আগর গাঁও ঢাকা এ গবেষনা কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছে। সে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি পাইন্যাল বর্ষে অধ্যয়নরত। মেঝ ছেলে সুজন কুমার দাশ বিবিএ অনার্স এমবিএ পাশ করার পর বর্তমানে স্কটডন লিডার (মেজর) হিসাবে বিমান একাডেমী যশোর এ কর্মরত, ছোট ছেলে রূপন কুমার দাশ এলএলবি অনার্স এলএলএম পাস করার পর বর্তমানে সহকারী জজ হিসাবে দিনজপুর জেলা ও দায়রা জজ অদালতে কর্মরত আছেন। ১৯৭৩ সালের১ জুলাই অরুন কান্তি দাশ জালিয়া পালং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। শিক্ষকতার সামান্য বেতনের অর্থ দিয়ে অতিকষ্টে খেয়ে না খেয়ে তিন সন্তানদের সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে তুলার লক্ষ্যে লেখাপড়ার ব্যবস্থা করেন।
অরুন কান্তি দাশ আরো জানান, তার তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলার কাজে সোনাইছড়ি গ্রামের মরহুম মোঃ আলম মাষ্টার, নিরুদ বরন মাষ্টার এবং কোটবাজারের পল্লী চিকিৎসক নৃপতি ভূষন দত্ত সহ এলাকার অনেক মানুষের কাছে ঋনী। গৃহবধু মাধুরী দাশ তিন সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পেরে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, তার স্বামীর শিক্ষকতার সামান্য বেতন নিয়ে অভাব অনটনে চলত তাদের সংসার। তবুও সন্তানদের শিক্ষিত করতে পারায় তিনি আজ মহা খুশি। জীবনের শেষ ইচ্ছা স্ব-পরিবারে দেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করার।
এদিকে সচেতন মহল মাষ্টার অরুন কান্তি দাশ ও মাধুরীকে শ্রেষ্ট অভিভাবকের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।
পাঠকের মতামত